শিশুর জন্য কিভাবে পাঠক্রম রচনা করা উচিত?
বর্তমান
সমাজ শিশুর পাঠক্রম এমনভাবে রচনা করে যে সেই পাঠক্রম
তার জীবনে শিক্ষার ক্ষেত্রে কার্যকরী হয় ঠিকই কিন্তু বিদ্যার ক্ষেত্রে কার্যকরী হয় না। তার জন্য প্রথমে জানা দরকার যে বিদ্যা এবং
শিক্ষা এই দুইয়ের মধ্যে
পার্থক্য কি? আমরা জানি একটা প্রবাদ রয়েছে যা সংস্কৃত শ্লোক
থেকে গৃহীত যে “বিদ্যা দদাতি বিনয়ং” আর আমরা এটাও
জানি যে শিক্ষা হলো
সেই মূল্য নির্ধারণ করার একটি শংসাপত্র যাতে শিক্ষার্থীকে একটি নির্দিষ্ট গঠন মূলক ভাবে তার প্রতিটি পর্যায়ে মূল্যায়ন করার একটি পদ্ধতি । শিক্ষা অর্জন করা খুবই সহজ শিক্ষা অর্জন করা এতটা সহজ যতটা আমরা নিত্যদিন জল পান করি
কিন্তু, বিদ্যা অর্জন করা ততটাই কঠিন যা আজকের সমাজ
একটি শিশুর বিদ্যা অর্জনের কথা ভাবেও না এবং সেটি
পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করেও না কারণ, আজকের
সমাজ এবং মানুষ কখনোই চায় না যে যে
জিনিস গুলো বাজে পরিকাঠামো গুলো তার আগামী দিনের সঠিক ভাবে চলাফেরা এবং তার জীবনটিকে সুগঠিত করার পথে প্রয়োজন সেটি দেওয়ার কোন কথা আজকের শিক্ষক বা বিশেষজ্ঞরা ভাবেন
না। অতএব বন্ধুগণ জানতে হবে যে মানুষ কেবলমাত্র
এমন একটি মেশিন যে তার ভাবনা
চিন্তা করার ক্ষমতা বা তার প্রয়োজন অনুসারে সে নিজেকে বিবর্তিত
করে বা তার নিজের
মনের বুদ্ধি এবং পরিবর্তন ঘটায়। বহু আগে যে পাঠক্রমে শিক্ষাদান
করা হতো যা আজ আমরা
বৈদিক পাঠক্রম বলে থাকি সেই পাঠক্রমের আজ মানুষ মনে
করে না যে, কোন
প্রয়োজন আছে কারণ , মানুষ আজ প্রচন্ড লোভী
এবং স্বার্থপর হয়ে উঠছে দিন দিন । যা তাকে নিশ্চিতভাবে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাবে।
এই প্রশ্নটিই খুবই
প্রাসঙ্গিক যে একটি শিশুর
জন্য কিভাবে পাঠক্রম রচনা করা উচিত যাতে তার সার্বিক দিক গুলি সুনিশ্চিতভাবে সংরক্ষিত হয় তার জীবনে চলার পথে পাথেয় হয়। এইজন্য সুতরাং শিশুর পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্তিকরণ কিছু বিশেষ দিকগুলি উন্মোচিত হলো-
প্রথমত, ধৈর্য এবং সন্তুষ্টি করণ বিদ্যা :-
শিশুর
মধ্যে শিক্ষাদানের সাথে সাথে বিদ্যা দানের প্রক্রিয়াটি মাথায় রেখে আমাদেরকে সেই শিশুর ধৈর্য শৈর্য এবং সন্তুষ্টি করণীয় অন্তর্ভুক্তিকরণের প্রয়োজন রয়েছে । আমরা কখনও একটি শিশুকে ধৈর্য করতে শেখাই না। যার জন্য আজ সমাজে প্রত্যেকে
অধৈর্য অশালীন এবং অসন্তুষ্টি জনক রোগে ভুগছে । আজ যে শিশুটি শুধুমাত্র
কয়েকটি স্বার্থের জন্য পাঠ কেন্দ্রে যায় এবং নিজস্ব স্বার্থের জন্য জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে কেবলই অধৈর্য এবং অসন্তুষ্টি কারণে ভোগে সুতরাং একটি শিশুর প্রথম থেকেই এই মানসিকতা গঠন
করার প্রয়োজন যে কিভাবে সে
তার ধৈর্য এবং সন্তুষ্টি করণ করতে পারে। আমাদের ভুললে চলবেনা যে বর্তমানে শিক্ষাব্যবস্থা
এবং জীবন গঠনের মানোন্নয়ন এই দুই প্রকারের
সাধনেরই উন্নতিকরণ ঘটানো হয়েছে কিন্তু এই কথা বললেও
চলবে না যে উন্নতিকরণ
ঘটনার পরেও কোন মানুষের মনের মধ্যে ধৈর্য এবং সন্তুষ্টি করণ বেড়েছে! বাড়েনি বা তার কোন উন্নতি হয় নাই আর হবেনা কারণ,
জানতে হবে যেমন আমরা পদার্থবিজ্ঞানে পড়ি যে শক্তি কোনদিনও
নষ্ট হয় না বা শক্তির
পরিমাণ কমে না বাড়ে না।
সেই রকম জানতে হবে যে জীবনে সন্তুষ্টি
করন, ধৈর্য, শান্তি, আনন্দ প্রভৃতি মূল্যবান মানসিক স্থিতি যে পরিমাণ সেটিও
কখনো বাড়বে না কমবে না।
আজ হতে পারে
শিল্পে বিপ্লব এসেছে। প্রযুক্তিতে উন্নয়ন ঘটেছে বা ঘটছে, উত্তরোত্তর
বৃদ্ধি প্রাপ্ত হচ্ছে। আমাদের আনন্দের জন্য, সমাজের উন্নয়নের জন্য, শিশুর উন্নয়নের জন্য এবং তার কল্যাণ সাধনের জন্য তবুও কোথাও না কোথাও মানসিক
স্থিতির অবনমন ঘটছে। তাই যত উন্নয়ন বাড়বে
ততো মানসিক স্থিতি খারাপ হবে। যতই উন্নয়ন মানুষের স্বার্থে বানানো হোক না কেন যত
আরাম প্রিয় এই সমাজ হবে
তত তার মনের মধ্যে থেকে আরাম চলে যাবে কারণ একটি দিক বারলে অন্যদিকে ঘাটতি অবশ্যই হবে কখনোই দুগুণ বা তিনগুণ হবে
না কারণ পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় বা বিজ্ঞানের আসল
তৃণমূল স্তরের
একটি তথ্য হলো এই যে, শক্তির
কখনোই পরিমাণ কমে না বাড়ে না
যেমন, একটি কাগজে আগুন ধরলে সেটি ভষ্বীভূত হয়ে যায় এবং পড়ে থাকে ছাই। এবার কাগজটির যে ওজন ছিল
ওজনের পরিমাণ যদি 100 গ্রাম হয়ে থাকে তাহলে পুড়ে যাবার পর তার ওজন
হয় কেবলমাত্র 15 থেকে কুড়িগ্রাম। তাই আমাদের মনে হয় যে হ্যাঁ শক্তির
পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু, আসলে পদার্থবিজ্ঞান যেটি বোঝায় বাজেটে দেখিয়েছে প্রমাণ করেছে সেটি হল এই যে
তার কখনোই কোনো শক্তির বা তার অস্তিত্বের
কোনরকম পরিবর্তন হয় নাই। তার থেকে দহনের ফলে যে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ছিল সেটি এবং তার সাথে তার থেকে যে এনার্জি বা
প্রভাব বা তরঙ্গ বাইরে
বেরিয়েছে সেই সবকটাকে যদি একসাথে আবার টেনে এনে তার ওজন মাপা হয় তখন দেখা যাবে যে সেটি 100 গ্রাম
রয়েছে। অতএব শক্তিকে কখনো বাড়ানো যায় না শক্তিকে কখনো
কমানো যায়না। আজ মানুষের বিফল প্রচেষ্টা যে সে শিক্ষা
দিয়ে জগৎ জিতবে, শিক্ষা দিয়ে আনন্দ আনবে, শিক্ষা দিয়ে উন্নতি করবে কিন্তু, আসল কথা
হল যে এইসবই করা
ব্যর্থ।
দ্বিতীয়ত, আচরণ ও অভ্যাসের প্রতি
যত্ন নেওয়া:-
এক্ষেত্রে বলাবাহুল্য যে প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীকে
তার শিক্ষা পরিকল্পনার মধ্যে মূল্যবোধ নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্বাচন করে। তার ওপর মূল্যায়ন করা হয় এবং তাকে সে মূল্যবোধের শিক্ষা
দেয়া হয় কিন্তু এই ক্ষেত্রে বলা
দরকার যে সেই মূল্যায়নের
মধ্যে যদি আচরণ অভ্যাসের প্রতি যত্ন নেওয়া বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাহলে, শিক্ষার সাথে সাথে বিদ্যমান উন্নয়ন হয় বা করা সম্ভব।তাই কেবলমাত্র পাঠ্যপুস্তক বা পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্তিকরণ
এই নয়, এটি যাতে কাল্পনিক না হয় প্রয়োগে
প্রয়োগিক থেকেও একই ফলপ্রসূ হয়। সেই জন্য শিক্ষক এবং অভিভাবককে এক্ষেত্রে তৎপর হওয়া উচিত এবং প্রথমে তাদের এই অভ্যাসগুলো নিজেদের
মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করানো উচিত কারন একটা কথা সবসময় মনে রাখা উচিত যে, আম গাছে আম
হয় তেতুল হয় না সেরকম যেরকম
তার বাবা মা তাকে যে
বিদ্যা,শিক্ষা যে কর্ম, যে
প্রচেষ্টা দিয়ে তাকে বড় করে তুলবে সে বড় হয়ে
সেটাই শিখবে এবং সেই দিকেই যাবে। আমেরিকার একটি সার্ভে দেখা গেছে যে, বাচ্চার বাবা মা ক্রিমিনাল কাজকর্ম
বা অপরাধপ্রবণ মানুষ তার বাচ্চা সবসময় অপরাধপ্রবণ হয়, সবসময় না হলেও ৯৫
পার্সেন্ট এর উপরে সেই
বাচ্চাটি অপরাধপ্রবণ মানসিকতা নিয়ে বড় হয় এবং পরে অপরাধের মানসিকতারশিকার
হয়।
তৃতীয়ত, আত্মসমালোচনা:-
এই আত্মসমালোচনার বিষয়টি
বর্তমান শিক্ষা পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্তি হয়নি। সুতরাং আজ প্রত্যেকটি শিশু
উন্মাদ, অবাঞ্ছনীয়, অশালীন, অধৈর্য, সম্মানীয় এবং খারাপ গুন আছে, যেগুলি আমাদের চক্ষুশূল বা পছন্দের নয়।
সেই রকম ব্যবহার করে থাকে কখনো শিশুদের এটি শেখানো হয় না যে, অপরকে
বিশ্লেষণ না করে প্রথমে
নিজেকে বিশ্লেষণ করো যে তুমি কি
কাজ করেছো বা করছো, কেন
করছ, কিসের জন্য করছো, কি প্রয়োজন এটি
কখনোই তার শিক্ষক এবং তার গৃহশিক্ষক অতএব তার অভিভাবক শেখার না কারণ, তারাই
জানেন না। তারা এভাবে শেখেননি তাই তারা তারিই শিশুকে শেখাতে পারেন না।
উদাসীন অভিভাবকগণ উদাসীন শিশুর জন্ম উদাসীন শিক্ষকের কাছে যান শিক্ষক উদাসীন নাগরিক তৈরি করেন সেই দেশের নাগরিক নেতা-মন্ত্রী হয়ে দেশকে বেঁচে থাকে কিন্তু, আমাদের ভুললে চলবেনা যে, প্রতিটি শিশুই তার এবং তার পরিবারের ওপর যে দায় দায়িত্ব
এবং দায়-দায়িত্বের থেকেও বড় সেটি হলো ভালোবাসা সেই ভালোবাসা নিয়ে এসে কোনো কাজ করে না কারণ থাকে
সে কাজ করানোর শেখানো হয়নি সে জানেই না
যে দায়দায়িত্ব এবং ভালোবাসার মধ্যে পার্থক্য কোথায়? ছোট ছোট মানসিক স্থিতি এই ছোট ছোট
মানসিক গঠন মূলক বিষয়গুলির কখনো বিশ্লেষণ করা হয় না কেন? কারণ,
শিক্ষক এবং অভিভাবক মনে করেন যে এই গুলি
বিশ্লেষণ এর কোনো প্রয়োজনই
নেই এবং শেষ সময় শেষ বলতে সেই অভিভাবকের একদম বার্ধক্যের সময় সে বুঝতে পারে
যে সে কী ভুল
করেছে, কিন্তু তখন বুঝে কিছু হয় না কারণ তার
জন্য মৃত্যু অপেক্ষা করছে এবং সে তার সম্পূর্ণ
জীবনের যা যা ভুল
সেগুলো বলার মতো পরিস্থিতিতে থাকেনা বা সে বললে কেউ শুনবে না। তাই কর্ম তো করা হয় কিন্তু, তার কোনো রকমের রিপোর্ট তৈরি করা হয় না এবং প্রত্যেকে
একই কারণে ভুগছে এবং ভুক্ত থাকবে যদি না এই সমস্ত
বিষয় গুলির প্রতি যত্ন নেওয়া হয় এবং এই সমস্ত বিষয়গুলি
কে বিশ্লেষণ না করা হয়।
চতুর্থ, সমাজ ও পারিবারিক সমন্বয়
সাধন:-
আজ প্রতিটি শিক্ষা
কেন্দ্রে কখনো সমাজ এবং পরিবার এই দুইয়ের সমন্বয়
সাধন এর ব্যাপারে কিছু
শেখানো হয় না। তার মানে এই যে আমাদের
শিক্ষাক্ষেত্রে পাঠ্যক্রম এবং পাঠ্যসূচি বানানো হয়েছে তার গঠনমূলক কোন কার্যই নেই। সেটি কেবলমাত্র একটি স্বার্থ সিদ্ধি করনের জন্য এবং আত্তীকরণ বহির্ভূত পাঠক্রম বানানো হয়েছে। পাঠক্রমে কোন মেরুদন্ড নাই যার জন্য শিক্ষার্থীরা কোন মেরুদন্ড নাই পাঠক্রমে কেবলমাত্র শেখানো হয় তত্ত্বগত দিক গুলি প্রায়োগিক দিক এর কোন মূল্য
নেই তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে যতটা সময় শিক্ষার্থীকে এই গঠনমূলক এবং
তথ্যমূলক এবং অপ্রাসঙ্গিক পাঠক্রমে পড়ানো হচ্ছে ততটা সময় যদি তার গঠনমূলক এবং মানসিক দিকে এবং এই সমস্ত ব্যক্তিগত
এবং মানসিক গুণবিশিষ্ট পাঠক্রম গঠন করে সেই পাঠক্রমের নির্ভুল মূল্যায়ন এবং চর্চা করা হতো তাহলে সেই শিক্ষার্থী সুদৃঢ় এবং সার্বিক সুন্দর হয়ে উঠতো জীবনে।
একটি শিশু জন্মানোর পর থেকে তার অভিভাবকের কাছে থেকে যে আচরণ বিধি শেখে এবং অভিভাবক যদি তাকে সেই আচরণবিধির নাও শেখান তা হল সেই শিক্ষার্থীর সামনে বা সেই শিশুর সামনে যে আচরণবিধির প্রকাশ ঘটান সেটি সেই শিশুটি দৃঢ়ভাবে শেখে যা সে তার পরবর্তী সময়ে সেই মাফিকই আচরণ করে।
পঞ্চমত,
আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতার অভাব:-
জানতে হবে যে অতীতে ভারতের
অন্যতম শ্রেষ্ঠ পুরুষ যিনি আত্মকেন্দ্রিক হবার কথা বলতেন স্বয়ং “স্বামী বিবেকানন্দ” তার কথা অমান্য করে গান্ধীজী এবং তার পৃষ্ঠপোষকতায় বড় হওয়া অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের সমাজ কেন্দ্রিক হওয়ার কে মানুষ মেনে
চলেছে এবং আজ তার ফল ভুগে
চলেছে মানে মানুষ আজও সেই পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে যেগুলি তার চলার পথে অত্যন্ত যন্ত্রণা এবং বেদনাদায়ক হয়ে উঠছে। তার জন্য তাদের কৃত বহু সময় পূর্বের কর্মের ফল অতএব “নরেন্দ্রনাথ
দত্ত” বলেছিলেন, যে প্রতিটি ব্যক্তি
যদি নিজের কল্যাণ সাধন করে নিজের মানসিকতাকে ঠিক করে নিজে বিদ্বান হয় এবং যদি নিজের আত্ম সমালোচনা করে এবং নিজেকে নিজে উত্তরণ করে তাহলে প্রতিটি মানুষ যখন এই একই ভাবে
নিজের উন্নতিকরণের এবং নিজের মানসিকতার উন্নতিকরণের কথা ভাববে তখন সমাজ স্বাভাবিকভাবেই সুন্দর হয়ে উঠবে কিন্তু, যে ব্যক্তি এই
আত্মকেন্দ্রিকতার বিপক্ষে বলেছিলেন তিনি বলেছিলেন যে না ব্যক্তি
কেউ নয় ব্যক্তি সমাজের জন্য সমাজের জন্য ব্যক্তি নয় এবং তিনি এও বলেছিলেন যে
ব্যক্তির উন্নয়ন সাধন এর চেয়ে বেশি
বড় বিষয় হল এই যে
সমাজের উন্নয়ন করা তাই আজ তার পথে
চলতে চলতে মানুষ অসভ্য অশালীন দুরাচারী ব্যভিচারী তে পরিণত হয়েছে।
শিশু প্রথম থেকেই তার সমাজের চারপাশের এই ঘটনা দেখতে
দেখতে বড় হচ্ছে এবং সে বড় হতে
হতে নিজেকে বিশ্লেষণ না করে অপরের
ওপর বিশ্লেষণ করছে আরেক ঘৃণ্য-জঘণ্য একটি সমাজের তৈরি এই শিশুগুলি হাত
ধরেই হচ্ছে অতএব বর্তমান পাঠক্রমের মধ্যে আত্মকেন্দ্রিকতার দিকটি অন্তর্ভুক্তিকরণ করলে শিশুর পাঠক্রমের উন্নত করণ করা সম্ভব।
ষষ্ঠত, কর্মতৎপরতা:-
একটি শিশুকে প্রথম অবস্থা থেকেই এই সম্বন্ধে অবগত
করা প্রয়োজন যে তাকে জীবনে
কর্মতৎপর হতে হবে সর্বদা। কর্ম করার কথা ভাবতে হবে এবং সেই কর্ম সম্পর্কে সচেতন হতে হবে কর্মকে নির্দিষ্ট এবং সাবলীল ভাবে সঞ্চার ঘটাতে হবে এবং নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হবে যাতে ভবিষ্যতে তাকে কোন আক্ষেপ করতে না হয় কর্মতৎপরতা
এমন একটি বিষয় বা গুন যা মানুষকে অগ্রগতির
পথে এগিয়ে নিয়ে যায় এবং সেই অগ্রগতি কেবলমাত্র গঠনমূলক নয় কার্যগত ভাবে প্রমাণিত কেবলমাত্র কর্মই ধর্ম হওয়া উচিত এবং শিক্ষার্থীকে বা শিশুকে এই
সম্বন্ধে তৎপর এবং অবগত করা অভিভাবকের এবং শিক্ষক প্রয়োজন এবং এই সম্পর্কে দৃষ্টি
নিক্ষেপ করা প্রয়োজন যাতে এই বিষয়টি পাঠক্রম
এর অন্তর্ভুক্ত হয়।
সপ্তমত, অব্যভিচারিণী
ভক্তিভাব:-
বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় অব্যভিচারিনীর ভক্তিভাব বিষয়টি বহিস্কৃত হয়েছে সম্ভবত শিক্ষাবিদরা মনে করেন যে এই মানসিক
স্থিতি বা গুনটির কোনো প্রয়োজন নেই কিন্তু বাস্তব আজ অন্য বাস্তবে
শিক্ষার্থীরা বড় হওয়ার পর কখনোই এই
অবিচার ভক্তিভাবে কথাটি সম্বন্ধে অবগত হয় না সুতরাং তারা
সেই মতো ব্যবহার করে। তার থেকে গুরুজনদের ওপর তাই প্রথম থেকেই শিক্ষক তথা অভিভাবককে এই অব্যভিচারিনীর ভক্তিভাব
প্রসঙ্গটির সম্পর্কে যথাযথ বর্ণনা দিয়ে এবং এর ফল সম্পর্কে
বিচার না করে শিক্ষার্থীকে
সেই সম্বন্ধে তৎপর করা শিক্ষক তথা অধ্যাপক বা অভিভাবকের কর্তব্য
এবং এই গুণটি বর্তমান
শিক্ষা প্রযুক্তি এবং বর্তমান পাঠক্রমের প্রযুক্তির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজন।
অবশেষে বলা যায় যে, উক্ত কয়েকটি বিষয় যেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো তারমান এবং প্রয়োজন যদি শিক্ষা সমাজ বুঝতে না পারে তাহলে,
আজ সমাজে ব্যাধির সম্মুখীন হচ্ছে যা হলো অপসংস্কৃতিবা
সংকর প্রজাতির সংস্কৃতি যে প্রজাতির বাজে
সংস্কৃতির কোন মাধুর্য নাই কোন উদ্দেশ্য নাই এবং যে সংস্কৃতি অকল্যাণ
ডেকে আনে আর এই সংস্কৃতি
যদি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম চলতে থাকে তাহলে আর সেই দিন
বেশি দূরে নেই যেদিন মানুষ চেয়েও নিজেকে সংশোধিত করার বিষয়গুলি কেউ খুজে পাবে না এবং ভুলে
গেলে চলবে না যে পাঠক্রম
কেবলমাত্র একটি মূল্যায়ন বা পদ্ধতি নয়
পাঠক্রম হলো শিক্ষা এবং বিদ্যার মজা বা সুষুম্নাকাণ্ড বা
শির দাড়া যতো মজবুত এবং যুক্তিযুক্ত এবং ব্যক্তি কল্যাণকর হবে ততোই সমাজকল্যাণ কর হবে এবং
শিশুর পরিবেশ ততই উন্নতি সাধন করবে।
0 Comments